আদর্শ বাবা হওয়ার উপায় – সন্তানের প্রতি বাবার দায়িত্ব পালন পদ্ধতি

আদর্শ বাবা হওয়ার উপায় – সন্তানের প্রতি বাবার দায়িত্ব পালন পদ্ধতি: সন্তান বাবা মায়ের অমূল্য সম্পদ। সন্তান যার নেই সেই বুঝে তার ব্যথা। কিন্তু সন্তান থেকেও যদি আপনি তাকে মানুষের মত মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে না পারেন তবে সেটা একান্তই আপনার ব্যর্থতা।

সন্তান লালন পালনের ক্ষেত্রে আমরা যেটা করি –

  • দুষ্টুমি করলে তাদের ধমক দেই।
  • সঠিক জিনিসটা শেখানোর পরিবর্তে মারধর করি।
  • ছেলে কিংবা মেয়েকে সমান চোখে দেখি না।
  • সন্তানের ভালো কাজের প্রশংসা করি না।
  • সন্তানকে কাজের প্রতি আগ্রহী করে তুলি না।
  • সন্তানের মতামতগুলো গুরুত্ব সহকারে শুনি না।
  • সম্ভব থাকা সত্ত্বেও তার পছন্দানুযায়ী কোনো জিনিস কিনি না।
  • অন্যদের সঙ্গে মিশতে দেই না।
  • অনেকে সন্তানকে একাকী রাখতে পছন্দ করি।
  • শিশুর ইচ্ছার বিরুদ্ধে কাজ করি।
  • প্রতিশ্রুতি দিলে সেটা পালন করি না।
  • শিশুকে ঘুরতে নিয়ে যাই না।
  • শিশুর সাথে অবসর সময় কাটাই না।
  • খেলাধুলার প্রতি শিশুর অনাগ্রহ সৃষ্টি করি।
  • একঘেয়েমি পড়াশোনায় বন্দী রাখি।
  • মিথ্যা বলার পরেও তাকে প্রশ্রয় দেই।
  • পড়ে গিয়ে ব্যথা পেলে তাকে আরো ব্যথা দেই।
  • কড়া শাসনের মাধ্যমে তার মনে ভয়ের সঞ্চার করি।
  • তার করা খারাপ কাজের বিরুদ্ধে কথা বলি না।

সন্তান পালনে বাবার ভূমিকা

এরকম হাজারটা উদাহরণ দেওয়া যাবে যা আজকালকার অভিভাবকরা করে থাকে। আসলে সন্তানকে একজন প্রকৃত মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে হলে সচেতন হতে হবে আপনাকেই। সেই সাথে হতে হবে একজন আদর্শ শিক্ষকও।

সন্তানের বাবা হিসেবে আপনাকে গুরুদায়িত্ব পালন করতে হবে। নিচে আমরা এমন কিছু পয়েন্ট তুলে ধরলাম যা মেনে চললে আপনার সন্তানকে একটি পূর্ণাংগ জীবন ব্যবস্থা দিতে পারবেন।

১। কান্না দমন করুন

জীবনের প্রথম দিকে বাচ্চারা যা চায় তা পাওয়ার জন্য হাতিয়ার হিসাবে কান্নার ব্যবহার করে। এটি ঘটতে দেবেন না। সে যা চায় তা যদি আপনি দিতে যাচ্ছেন তবে সেটি কেবল একবার দিন অথবা একেবারেই দেবেন না।

উদাহরণস্বরূপ, বাজারের সবচেয়ে দামী ড্রেসটা কেনার জন্য সে আপনার কাছে কান্নাকাটি শুরু করল। আবার কিছুদিন পর বাজারের দামী মোবাইলটা কেনার জন্য বায়না ধরল। এরপর তার একটা দামী ল্যাপটপ চাইই চাই। এক্ষেত্রে আপনি তার চাহিদাগুলোর শুধু মাত্র প্রথমটি পূরণ করুন।

তাও আবার তৎক্ষণাৎ নয়, বরং কান্নার পরদিন বা কান্না থামানোর কিছু সময় পর। আবার কোনো বাজে কাজে সে আপনার কাছে ৫০০০ টাকা আবদার করল। আপনি তাকে পুরোটা না দিয়ে তাকে ১৫০০-২০০০ টাকা দিন। তাও আবার এক সাথেই নয়। দুই তিন দিনে ৫০০ কিংবা ১০০০ করে মিলিয়ে দিন। যাতে সে টাকার গুরুত্ব বুঝতে পারে এবং এটাও উপলদ্ধি করতে পারে যে ‘চাইলেই সবকিছু পাওয়া যায় না।’

এভাবে পছন্দের জিনিসগুলো বার বার পাওয়ার জন্য তারা কান্নাকাটি করবে এবং এমন সব কর্মকাণ্ড করবে যা আপনাকে গলে ফেলবে। শেষ পর্যন্ত আপনাকে তাদের চাহিদার কাছে আত্মসমর্পণ করাবে। আর আপনিও কোনো কূলকিনারা না পেয়ে তাদের প্রতিটি চাহিদা তৎক্ষণাৎ পূরণ করে চলেছেন। তবে এমনটা কেবল তাদের একগুঁয়ে বা জেদী এবং অবাধ্য করে তুলবে। এমনকি তারা যা চায় তা পাওয়ার সহজ উপায় হিসাবে ব্যবহার করবে কান্না।

কিভাবে দূর করবেন?

আপনাকে প্রথমে কয়েকবার কিছুটা কঠোর হতে হবে। যাতে তারা বুঝতে পারে কান্নাকাটির কোনও মানে হয় না। কান্না করলেই সবকিছু পাওয়া যায় না। প্রতিটি জিনিস অর্জন করতে কষ্ট করতে হয়, পরিশ্রম করতে হয়। এমন পরিস্থিতিতে তাদের সাথে মোকাবিলা করার এটাই যুক্তিসঙ্গত উপায়। বরং এটার মাধ্যমে তারা যে কোনো জিনিসের মূল্য দিতে শিখবে।

২। সন্তানকে ভাগাভাগি করতে শেখান

এটি এমন একটি গুণ যা অনেক শিশুর মাঝেই পরিলক্ষিত হয় না। আর না হওয়ার পেছনে দায়ী মূলত অভিভাবকরাই। কারণ তাদেরকে সেভাবে শিক্ষা দেওয়া হয় না। আর স্ব-শিক্ষায় এ গুণটি অর্জন করতেও বহু সময় চলে যায়। ততদিনে নানাবিধ কাণ্ড ঘটে যায়। মূলত, যে সকল অভিভাবকদের সন্তান কেবলমাত্র ১ জন সে সকল শিশুদের ক্ষেত্রে ভাগাভাগি বিষয়টি শেখানো বেশ জটিল হয়ে উঠে।

এ গুণটি না থাকলে শিশুরা –

  • অন্যদের সাথে কোনো জিনিস শেয়ার করতে চায় না।
  • সব সময় নিজেকে নিয়ে চিন্তা করে। এক কথায় ‘নিজে বাঁচলে বাপের নাম’ এমন মনোভাব তৈরি হয় তাদের মাঝে।
  • তারা প্রতিবেশির কোনো খবর রাখে না।
  • এমনকি এমন সন্তানেরা পরবর্তীতে পিতামাতাকেই দূরে ঠেলে দেয়।

কিভাবে দূর করবেন?

আপনার আদরের বেবিটাকে আপনি আইসক্রিম কিনে দিতে যাচ্ছেন। কিন্তু দেখলেন তার পাশে আরো একটি বেবি আছে। তাহলে একটি নয়, বরং দুটি আইসক্রিম কিনুন এবং আপনার বাবুটাকে দেখিয়ে দেখিয়ে তার সামনেই ঐ বাবুটাকেও আইসক্রিম দিন। আদরের ভাষায় বলতে পারেন – ‘একটা আমার বাবাটার জন্য, আর একটা মিষ্টি বাবুটার জন্য।’ অথবা আপনি তাকে পটেটো চিপস কিনে দিতে যাচ্ছেন। তাহলে একটি চিপস কিনে ‘আপনার বাবুটার সাথে পাশের বাবুটাকেও খাওয়ান।’ আদরের ভাষায় বলতে পারেন – ‘মিষ্টি বাবুটা, আসো আমাদের সাথে চিপস খাও।’ এভাবে বাচ্চাকে আপনি ভাগাভাগি বা শেয়ার বিষয়টা সম্পর্কে অবগত করতে পারেন।

৩। শিশুকে রাস্তা পারপার হতে শিখান

বাংলাদেশ ঘনবসতিপূর্ণ দেশ হওয়ায় রোড এক্সিডেন্ট একটা প্রতিনিয়ত ঘটনা। এই রোড এক্সিডেন্ট এর জন্য প্রতিনিয়ত ঝরে যায় অনেক তাজা প্রাণ। অকালে মৃত্যু হয় অনেক শিশুর। কেবল সাবধানতা ও রাস্তা পারাপারের নিয়ম কানুনই পারে এই বিপদ থেকে রক্ষা করতে।

কিভাবে শেখাবেন?

  • প্রথমেই শিশুকে সচেতন করুন। তাকে রোড এক্সিডেন্ট সম্পর্কে জানান।
  • রাস্তা পারাপারের সময় তাকে জেব্রা ক্রসিং ব্যবহার করতে বলুন।
  • জেব্রা ক্রসিং না থাকলে প্রথমে বামে তারপর ডানে ভালোভাবে তাকিয়ে রাস্তা পার হতে হবে। তবে এটা খেয়াল রাখতে হবে, যাতে ঐ মহূর্তে কোনো গাড়ি না আসে।
  • রাস্তার পাশ দিয়ে হেটে যাওয়ার সময় ফুটপাত ব্যবহার করা শেখান। ফুটপাত না থাকলে নিরাপদ দুরুত্ব ব্যবহার করা শেখান।

সর্বোপরি, ট্রাফিক আইনগুলো সম্পর্কে তাকে ধীরে ধীরে একটি পূর্ণাংগ ধারণা দিন। তবে একটা বিষয় খেয়াল রাখবেন, আপনি তাকে যা শিখাতে যাচ্ছেন তা আগে নিজে করে দেখান। তবেই সে তা সহজে গ্রহণ করবে। দেখা গেল, আপনি তাকে শুধু জ্ঞানই দিয়ে গেলেন, কিন্তু রাস্তা দিয়ে পারাপারের সময় নিজেই নিজের কথার বরখেলাপ করলেন তা হলে ফলাফল শূণ্য ছাড়া কিছু হবে না।

কেননা, বাচ্চা আপনাকে প্রতি মহূর্তে ফলো করছে। আপনি তাকে জ্ঞান দিয়ে নিজেই যদি না পালন করেন তবে সেটাও সে লক্ষ করবে এবং একটি বিরুপ মনোভাব তার মধ্যে তৈরি হবে। যেটা আপনি এবং তার উভয়ের জন্য ক্ষতিকর।

৪। বইয়ের বাইরে শিক্ষা

বাচ্চা যখন স্কুলে যাওয়া শুরু করে তখন তাকে পাঠ্যবই বর্হিভূত কার্যকলাপে অংশ নিতে উৎসাহিত করুন। অর্থাৎ তাকে কুইজ বা খেলাধুলার মত কোনো বিষয়ে অংশগ্রহণ করতে দিন। স্ব-ইচ্ছায় এসব বিষয়ে অংশ নিতে চাইলে তাকে কখনোই জোর করবেন না। অর্থাৎ সে যখন চায় তখনই তা নিজ ইচ্ছায় করার চেষ্টা করুক। মনে রাখবেন, খেলাধুলা কিন্তু পড়াশোনারই একটা অংশ। আপনার দায়িত্ব হলো শুধু তাকে উৎসাহিত করা।

৫। সন্তানকে সময় দিন

বাচ্চার চাহিদা পূরণ করা অর্থাৎ তার জন্য শুধু খাবার আর খেলনা নিয়ে আসাই একজন প্রকৃত বাবার মূল কাজ নয়। সন্তানকে যথেষ্ট সময় দেওয়াটাও জরুরি। শিশুর পূর্ণাঙ্গ জীবন গঠনে তার জন্য আপনাকে যথেষ্ট সময় বের করতেই হবে। কেননা, শিশুরা বাবা মায়েদের সঙ্গ পেতে চায়, তাদের কথা শুনতে চায়, তাদের কোলে উঠতে চায়, আদর পেতে চায়।

তাই আপনি যা করবেন-

  • বাচ্চার খেলার সঙ্গী হোন।
  • তার সাথে অলস দুপুর কাটান।
  • তাকে নিয়ে ঘুরতে বেড়োন।
  • অফিস থেকে ফিরেই আগে বাচ্চার খোজখবর নিন।

কেননা, এসব কিছুই বাচ্চার জীবন গঠনে ইতিবাচক ভূমিকা পালন করে। তাই বাচ্চার জন্য যথেষ্ট সময় আপনার টাইম টেবিলে যুক্ত করে নিন।

৬। প্রশ্রয় দিবেন না

সন্তান লালন পালনের ক্ষেত্রে আমাদের সবচেয়ে বড় ভুলটি হয় এখানে। মনে রাখবেন, প্রশ্রয় দিলে তারা আরো বড় ভুল করার পথে পা বাড়ায়।

উদাহরণস্বরূপ, লোক মারফতে আপনি জানতে পারলেন যে ক্লাস ফাইভে পড়া আপনার বাচ্চাটা সিগারেট খাওয়া শুরু করেছে। অথবা বাইরে মারামারি করে আসল। এমন সময় অপর বাচ্চাটার অভিভাবক আপনার কাছে নালিশ নিয়ে আসলে আপনি বললেন – ‘ওতো ছোট মানুষ। দু’একটা ভুল করতেই পারে।’

মনে রাখবেন, এই কথাটি বলার মাধ্যমে আপনি তার ভবিষ্যত অন্ধকারের দিকে ঠেলে দিলেন। কেননা, আপনি যখন তার পক্ষ নিয়ে এ কথাটি বলেছেন তখন সে আর কোনোকিছুকে তোয়াক্কা করে না। এভাবে তার অপরাধ প্রবণতা ধীরে ধীরে বেড়ে যায়। তাই সন্তানকে প্রশ্রয় না দিয়ে যথাসময়ে উপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করুন।

৭। মিথ্যাকে প্রশ্রয় দিবেন না

হ্যা, ‘মিথ্যা বলা মহাপাপ’ এটা আমরা সবাই জানি। বড়রা এটা বুঝলেও ছোটরা বিপদ থেকে বাঁচতে হরহামেশাই এর ব্যবহার করে থাকে। মিথ্যা মানুষকে ধীরে ধীরে অবনতির দিকে ঠেলে দেয়। আর মিথ্যা বলা ব্যক্তিগুলো পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের কাছে কলঙ্কিত। মিথ্যাচারকারীকে কেউ পছন্দ করে না।

উদাহরণস্বরূপ, বাবুটা পাশের বাসায় খেলতে গিয়ে বড় আপুর কলম চুপ করে পকেটে করে নিয়ে এসেছে। আপু এসে কলমটা ফেরত চাইলে সে সাফ জানায় আমি ওটা নেইনি। কিন্তু আপনি তার পকেটের ফাঁকে ঠিকই কলমটা দেখতে পাচ্ছেন। মূলত, আপনার শাস্তির ভয়ে সে মিথ্যা কথা বলছে।

এখন এমন পরিস্থিতিতে আপনি যদি তার এই মিথ্যা বলার প্রবণতাকে প্রশ্রয় দেন তাহলে পরবর্তীতে সে আরো বড় ধরনের অপরাধের সাথে যক্ত হবে। তাই প্রথমদিন থেকেই ‘মিথ্যা বলার প্রবণতা’ দমনে আপনাকে সচেষ্ট ভূমিকা পালন পালন করতে হবে। প্যারেন্টিং পদ্ধতিতে এটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়।

কিভাবে দূর করবেন?

  • প্রথমত, মিথ্যা কথা বলা যে খারাপ এটা শিশুদের বোঝাতে হবে।
  • সত্যটা যে সবার কাছে গ্রহণযোগ্য এটাও বোঝাতে হবে।
  • মিথ্যা বললে তাকে কেউ পছন্দ করে না, তার সঙ্গে খেলে না, তাকে কেউ ভালোবাসে না – এমন একটা ধারণা শিশুদের মনে গেঁথে দিতে হবে।
  • সাবধান করার পরেও শিশু আবার মিথ্যে বললে, তাকে শাস্তি দিন।
  • মিথ্যা বলার পর যদি সে সত্যিটা স্বীকার করে নেয়, তবে তাকে পুরস্কৃত করুন।
  • যদি তার মিথ্যা বলার প্রবণতা কোনোভাবেই দূর করা না যায় তাহলে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।

অর্থাৎ শিশুসুলভ আচরণ দিয়েই শিশুকে সত্যের সাথে পরিচয় করিয়ে দিতে হবে।

৮। ‘Sorry’ বলা শেখান

‘ভুল করে ক্ষমা চাওয়া’ মানব চরিত্রের একটি মহৎ গুণ। কিন্তু সব ব্যক্তিই এই গুণটি নিজের মধ্যে ধারণ করতে পারে না। তাই নিজের সন্তানকে ভুল হলে সরি বলা শেখান।

উদাহরণস্বরুপ, আপনার আদরের বাবুটা সহ হাঁটতে বের হয়েছেন। কিন্তু পথিমধ্যে আপনার অমনোযোগিতার জন্য কোনো এক অপরিচিত ব্যক্তির সাথে ধাক্কা খেয়ে তার হাতে রাখা বইগুলো পড়ে গেল। এই মহূর্তে আপনি তাকে বইগুলো মাটি থেকে তুলতে সাহায্য করুন।

এরপর তাকে বলুন, ‘আমি সত্যিই খুব দুঃখিত। আমি একেবারেই আপনাকে লক্ষ করিনি।’ এদিকে পুরো ঘটনাটা আপনার বাচ্চা স্ব-চোখে পর্যবেক্ষণ করল। এখান থেকে সে এটাই শিখল যে নিজের ভুল হলে অন্যের কাছে ক্ষমা চাইতে হয়।

৯। কোনো কাজে বাঁধা নয়

কোনো কাজ শিশুরা করতে চাইলে তাতে বাঁধা দেওয়া উচিত নয়। বরং সে কোন কাজটাতে আগ্রহ প্রকাশ করছে সেটা বোঝার চেষ্টা করুন। যদি উক্ত কাজটি তার জন্য ভালো বলে মনে না হয় সেক্ষেত্রে তাকে বোঝান। কাজটির ভালো মন্দ দিক তার সামনে তুলে ধরুন। সন্তান যেন আপনার অবর্তমানে বা আড়ালে কোনো কিছু না করে সেদিকে লক্ষ রাখুন। “বাবাকে এটা বললে আমাকে মারবে” – এমন মনোভাব যেন শিশু চরিত্রে না জন্মায়।

কিভাবে বদলাবেন?

  • প্রয়োজনে তার বন্ধু হোন।
  • তার কথাগুলো মনোযোগ দিয়ে শুনুন।
  • তার চিন্তা-ভাবনাগুলো গুরুত্ব সহকারে দেখুন।
  • যথাযথ মনে না হলে তার প্রশ্নের ভালোমন্দ দিক তুলে ধরুন।

এভাবে আপনি সন্তানের পাশে থাকলে তাদের মনের কথা সব আপনাকে খুলে বলবে। আর আপনিও তার ভালোমন্দের উপর আমল করতে পারবেন। আদর্শ বাবা হওয়ার উপায় গুলোর মধ্যে এটি অন্যতম।

১০। কড়া শাসন নয়

কড়া শাসন শিশুদের জন্য কোনোমতেই কাম্য নয়। কড়া শাসনের ফলে শিশুরা ভয় পায়। এতে শিশুদের মাঝে সত্য লুকানোর প্রবণতা বাড়ে।

ধরেন, বাচ্চা স্কুলের কোনো এক পরীক্ষায় রেজাল্ট খারাপ করেছে। এখন টিচার বলেছে খাতায় অভিভাবকের স্বাক্ষর আনতে। কিন্তু সে জানে আপনি কতটা রাগী! কতটা ভয়ংকর হবেন তার এ রেজাল্ট দেখে! সত্যি বলছি, আপনার এমন চরিত্রে বাচ্চা ভয় পাবেই পাবে। সে তখন বিষয়টি গোপন করে নিজে নিজে আপনার স্বাক্ষর নকল করার চিন্তা করবে। ধীরে ধীরে সে আপনার অগোচরে এমন সব কাজ করবে যা তার জন্য মঙ্গলজনক নয়।

কী করবেন?

  • সন্তানের বন্ধু হোন।
  • একজন ভালো শ্রোতা হোন।
  • একবার খারাপ করলে পরের বার ভালো করার জন্য অনুপ্রেরণা দিন।

এভাবে তাকে ভয়ভীতি না দেখিয়ে তৈরি করুন।

১১। কাজের প্রতি আগ্রহী করে তোলা

আপনি যদি বাচ্চাকে দিয়ে কিছু করাতে চান তবে তাকে সেটা করতে বলবেন না, বরং আগে সেটি তাকে করে দেখান। এটা সবাই জানি যে, বাচ্চারা অনুকরণপ্রিয়। তাই একটি নির্দিষ্ট বয়স পর্যন্ত বাচ্চারা কেবল আশেপাশের লোকেরা যা করে তা অনুসরণ করে।

বিশেষত তাদের বাবা-মা যা করছেন। তাই আপনি যদি চান যে আপনার মেয়ে/ছেলে আপনার কিছু ভালো অভ্যাস তার নিজের মধ্যে গড়ে তুলুক তবে নিয়মিত তার সামনে সেটা করে দেখান। এটা হতে পারে সংগীত বলা বা শোনা এবং কারো প্রশংসা করা, কাউকে ধন্যবাদ জানানো বা কাউকে অভ্যর্থনা জানানোর মতো কিছু।

উদাহরণস্বরূপ, আপনি অবসরে ক্লাসিক্যাল বাংলা গানগুলো শুনতে পছন্দ করেন। তাহলে তার সামনে অবসরে সে গান গুলোই শুনুন। পরীক্ষায় পাশের বাসার ছেলেটা জিপিএ ফাইভ পেয়েছে। তাহলে আপনার সন্তানের সামনেই তার প্রশংসা করুন। বলুন – ‘ওয়াও! খুব ভালো রেজাল্ট। এই পজিশনটা ধরে রাখো। তুমি জীবনে সফল হবে।’ বাসার কাজের লোকটি আপনার জন্য নারিকেল নিয়ে এসেছে। আপনার সন্তানের সামনেই তাকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করুন।

নতুন অতিথি বাসায় এসেছে। তাদের সালাম/আদাব দিয়ে অভ্যর্থনা জানান। এভাবে দৈনন্দিন কাজগুলোতে আপনি তাকে একজন প্রকৃত মানুষ হওয়ার শিক্ষা দিতে পারেন।

১২। সহযোগিতার মনোভাব তৈরি করুন

মানব চরিত্রের এটাও একটি মহত গূণ। পৃথিবীতে কেহ একা চলতে পারে না। প্রতিনিয়ত কোনো না কোনো কাজে আমরা অন্যের সাহায্য কামনা করি। আপনাকে যদি জঙ্গলে ছেড়ে দিয়ে আসা হয় তবে চাইলেও আপনি একা থাকতে পারবেন না। কারণ সেখানে না পারবেন কারো সাথে মনের ভাব প্রকাশ করতে, না পারবেন নিজের সব প্রয়োজন মেটাতে। আপনাকে বাধ্য হয়ে সভ্য দুনিয়ায় ফিরতেই হবে। অন্যের সহযোগিতা নিতেই হবে।

ভাবছেন, আমি একা চলতে পারি। আমাকে কারো সাহায্য লাগবে না। আমি কারো উপর নির্ভরশীল নই। তাহলে একবার ভাবুন তো, বাজার না করলে আপনি রান্না করবেন কি, নাপিত না থাকলে চুল কাটাবেন কাকে দিয়ে, কৃষক না থাকলে চাল পাবেন কোথায়? এরকম হাজারটা উদাহরণ দেওয়া যাবে। তাই সন্তানদের মধ্যে সহযোগিতার মনোভাব তৈরি করুন।

কিভাবে তৈরি করবেন?

  • বাসায় ফকির আসলে তার দ্বারা ভিক্ষা দেওয়ান। এটি তাকে অন্যকে সাহায্য করার মনোভাব তৈরি করবে।
  • ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে (মসজিদ কিংবা মন্দিরে) তার দ্বারাই দান করান।
  • বাড়ির পাশে কোনো অভাবগ্রস্থ লোক থাকলে তার দ্বারাই সহযোগিতা করান।
  • রাস্তাঘাটে কোনো দুস্থ লোক দেখলে তাকে সাহায্য করতে পারেন।

এভাবে আপনি তার মধ্যে সহযোগিতার মনোভাব তৈরি করতে পারেন।

১৩। বেশি বকাঝকা না করা

বাচ্চা মানুষ ভুল হওয়াটা স্বাভাবিক। তাই বলে তাকে রাগ দেখিয়ে বকাবকি করতে যাবেন না। বরং আপনি তাকে সঠিক জিনিসটা শিখিয়ে দিন এবং বুঝিয়ে বলুন। তাকে এটা বোঝাতে চেষ্টা করুন তার ভুলের জন্যে কী কী খারাপ হচ্ছে বা হতে পারে।

উদাহরণস্বরূপ, নিষেধ করা সত্ত্বেও বাবুটা গাছে উঠে পড়ে গেছে। আর আপনি তাতেই রেগে গেলেন। শুরু করলেন শারীরিক নির্যাতন আর বকাবকি। অথবা আপনার পছন্দের ঘড়িটি অসাবধাণতাবশত পড়ে গিয়ে ভেঙে ফেলেছে। আর আপনি চট করে রেগে গিয়ে তাকে শুরু করলেন বেধরক মার।

এভাবেই আপনি তাকে ঠেলে দিচ্ছেন ভুল পথে। যদি সে একবার নিষেধ সত্ত্বেও পুণরায় ভুল করে তাহলে তাকে বকা না দিয়ে বরং আরো কয়েকবার তাকে শেখানোর চেষ্টা করুন। দরকার হলে পর্যাপ্ত সময় নিন।

১৪। নেশাদ্রব্য থেকে দূরে রাখুন

নেশাদ্রব্য একটি মারণব্যাধি। বিড়ি, সিগারেট, পান, গুল কিংবা অ্যালকোহল জাতীয় যে কোনো নেশাদ্রব্য মানবশরীরের জন্য ভালো নয়। ক্যান্সার, যক্ষা ছাড়াও ফুসফুসের নানাবিধ রোগ হয়ে থাকে নেশাদ্রব্য পান করার ফলে। তবে হ্যা আপনি যদি নেশাদ্রব্য পান না করেন তবে বাচ্চা অটোমেটিক তা করবে না। আর আপনি যদি বাচ্চার সামনেই নেশাদ্রব্য করে থাকেন তাহলে বাচ্চাও অল্প বয়সে অটোমেটিক নেশাদ্রব্য ধরবে। হয়তো, আপনার ভয়ে সে লুকিয়ে লুকিয়ে খাবে। কিন্তু এটা নিশ্চিত সে সেটা করবেই।

কিভাবে দূর করবেন?

  • নেশাদ্রব্য পানের খারাপ দিক সম্পর্কে তাকে অবহিত করুন।
  • প্রয়োজনে ইন্টারনেট থেকে নেশাদ্রব্য পানের ফলে হওয়া সৃষ্ট রোগ গুলো তাকে দেখান।
  • হাসপাতাল থেকে তাকে ঘুরিয়ে আনতে পারেন।
  • নেশাদ্রব্য থেকে নিজে দূরে থাকুন, সন্তানকে দূরে রাখুন।

এভাবে তাকে নেশাদ্রব্য থেকে দূরে রাখতে পারেন।

১৫। ছোটবেলা থেকেই দায়িত্ব শেখান

অনেক বাবা মাই আছেন যারা সন্তানের সকল কাজগুলো নিজেই করে দেন। হ্যা, যদি আপনিও এমনটা করে থাকেন তবে আজই বাদ দিন। কেননা, এতে শিশু দায়িত্ব নিতে শিখে না। কিন্তু আমাদের উচিত তাকে ছোট ছোট দায়িত্ব দিয়ে তা যথাযথভাবে পালনের শিক্ষা দেওয়া।

উদাহরণস্বরূপ, সন্তানকে দেওয়া দায়িত্বগুলো হতে পারে এরকম – খাওয়ার পরে প্লেটটা পরিষ্কার করে যথাযথ স্থানে রাখা, সকালে ঘুম থেকে উঠে নিজে নিজেই ব্রাশ করা, স্কুল থেকে ফিরে জামাকাপড়, জুতামোজা পরিষ্কার করে রাখা, বাবা-মায়ের বিভিন্ন কাজে সাহায্য করা এবং ঘুমানোর সময় নিজের বিছানা বালিশ নিজেই পরিষ্কার করা।

যদি কোনো শিশু এই কাজগুলো করতে দ্বিধা বোধ করে তবে তাকে বকা না দিয়ে বুঝিয়ে বলুন। তাকে এটা বলুন – ‘নিজের কাজ নিজেই করা উচিত। নিজের কাজ নিজে করা খারাপ কিছু নয়। দেখবেন, ঠিক সে আপনার কথা মেনে নিবে।

১৬। প্রতিশ্রুতি পালন করুন

সন্তানকে কোনো প্রতিশ্রুতি দিলে তা যথাযথভাবে পালন করা উচিত। এর মাধ্যমে শিশুরা প্রতিশ্রুতি পালনের শিক্ষা পায়। পাশাপাশি ভালো কিছু করার জন্য তার প্রশংসাও করা উচিত। এটি তাকে ঐ কাজে আরো বেশি অনুপ্রাণিত করে।

উদাহরণস্বরূপ, আপনি কথা দিলেন সপ্তাহের পাঁচদিন ভালোভাবে স্কুলে গেলে তাকে শুক্রবার বেড়াতে নিয়ে যাবেন। আর সে যদি সপ্তাহের পাঁচ দিনই স্কুলে যায় তাহলে অবশ্যই শুক্রবারে তাকে বেড়াতে নিয়ে যাওয়া উচিত। কিন্তু সে যদি ৪ দিন স্কুলে যায় তবে সেক্ষেত্রে তাকে বেড়াতে নিয়ে যাওয়া উচিত নয়। অন্যদিকে সে পাঁচ দিনই স্কুলে গেল। কিন্তু আপনি তাকে বেড়াতে নিয়ে গেলেন না। এমনটা হলে তার মন ভেঙে যাবে। সেও কথার বরখেলাপ করা শিখবে।

তাই অবশ্যই মনে রাখবেন, সন্তানকে প্রতিশ্রুতি দিলে অবশ্যই তা পালন করবেন।

১৭। ছেলে কিংবা মেয়ে সমান অধিকার

অনেক বাবা মাকে দেখা যায় ছেলেদের বড় মাছের মাথাটা খাওয়াতে আর মেয়েকে মাছের পেটি দিয়ে খাওয়াতে। কেন? কারণ বয়স্ক কালে ছেলেরা বাবা মাকে দেখবে কিন্তু মেয়েরা তো পরের ঘরে চলে যাবে। তাহলে আপনার কাছে প্রশ্ন রইল, ‘আপনি কি শতভাগ নিশ্চিত হয়ে বলতে পারবেন এই ছেলে সন্তান বড় হয়ে আপনার বার্ধক্য কালে আপনাকে দেখবে।’ না, পারবেন না।

কারণ বর্তমানে এমন অনেক নজির আছে দেশের সবচেয়ে সুনামধন্য চাকরী করা ছেলেটার বাবা মাও বৃদ্ধাশ্রমে থাকে। বিদেশে থাকে বলে মৃত বাবাকে এক নজর দেখার জন্যও আসে না। যাই হোক, সন্তান লালন পালনে আপনাকে হতে হবে নিরপেক্ষ। ছেলে বা মেয়ের মধ্যে কোনো পার্থক্য রাখা যাবে না। উভয়কে সমান ভালোবাসা দিতে হবে। তবেই আপনি একজন আদর্শ বাবা হতে পারবেন।

১৮। মায়ার বাঁধনে বন্দী

সর্বশেষে সমস্ত ছোট ছোট মুহুর্তের ছবিগুলো ফ্রেমে বাধাই করে রাখুন। বছরের শেষে যখন সে সেগুলোর দিকে নজর দেবে, এগুলি কেবল ছবিই নয় বরং সেগুলোর সাথে স্মৃতি যুক্ত হবে। সন্তানদের সাথে একটা মহব্বতের সম্পর্ক গড়ে তুলতে আপনি তার জীবনের ছোট ছোট কিছু মহূর্ত এভাবে ফ্রেমবন্দী করে রাখতে পারেন। অনেক সময় বাস্তব বস্তু সংবেদনশীল বন্ধনকে আরও শক্তিশালী করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

সকল সন্তানদের জন্য বাবাকে নিয়ে কিছু উক্তি –

বাবা হলেন একটি বাড়ির ছাদ, যে নিজে পুড়ে সন্তানদের ছায়া দেয়, কিন্তু মুখ ফুটে কিছু বলে না।

বাবা মানে সাহস, বাবাই আসলে বাস্তব,
হাঁসি খুশির জীবনে, বাবাই মোদের রক্ষক।
বাবাই মোদের সম্পদ, সব সংগ্রামের স্রষ্টা,
বাবার থেকেই তৈরি, প্রতিটি জীবনের পৃষ্টা।

প্রশ্ন – উত্তর পর্ব

সন্তান লালন পালনে বাবার ভূমিকা কি?

একটি চারাগাছের জন্য প্রয়োজন মা গাছের বীজ, আর সেই চারাগাছটি ঝড়, বৃষ্টি উপেক্ষা করে ঠিক ভাবে বেড়ে ওঠার জন্য প্রয়োজন শক্ত খুঁটি। বাবারা হলেন সন্তানের জন্য এই খুঁটি। প্রত্যেক বাবা তার সন্তানের জন্য আদর্শ বহন করে, বিশেষ করে মেয়েরা তার বাবাকে অন্ধ অনুসরণ করে। একা মায়ের পক্ষে কখনই ঠিকমত প্যারেন্টিং করা সম্ভব নয়।

তাই বাবা হিসেবে যদি আপনি সারাদিন বাইরে হাড়ভাঙ্গা খাটুনি করেন, আর সন্তানদের সময় না দেন তাহলে সেই কষ্ট আপনার বৃথা। কারণ ছোটবেলা থেকে বাবার সাথে শিশুর সম্পর্ক সারাজীবন স্মরণীয়। প্রতিটি সন্তান তার বাবা মায়ের প্রতি ভক্ত হয় ছোটবেলার আদর স্নেহ আর ভালোবাসা পেয়ে।

তাই বাবা হিসেবে শুধু আপনাকে উপার্জন করলেই হবে না, সন্তানের সাথে সময় কাটাতে হবে, বন্ধুর মত মিশতে হবে। তাহলেই আপনার সন্তান একজন মানুষের মত মানুষ হয়ে উঠবে। আর আপনি একজন গর্বিত সন্তানের বাবা হিসেবে সমাজে মাথা উঁচু করে চলতে পারবেন।


বাবার সাথে সন্তানের সম্পর্ক কেমন হওয়া উচিত?

সহজ কথায়, বন্ধুর মত। অনেক বাবা ভাবেন বন্ধুর মত ভাবলে সে তো আর সম্মান দিবে না, কথা শুনবে না। তাই তার সাথে একটা দূরুত্ব বজায় রেখে অনেকটা শাসনের ভঙ্গিতে শিশুকে ভয় দেখিয়ে মানুষ করতে চায়, যা একদম ভুল। মায়েরাও চায় সন্তানকে বাবার ভয় দেখিয়ে শাসন করতে। এতে কিন্তু সাময়িক সময়ের জন্য আপনি তাকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারলেও বেশিরভাগ সময়ে বা আপনার অনুপস্থিতিতে সে ঐ ভুল বারবার করবে। কারণ ভয়ে দমন থাকা কাজ বারবার করতে মন চায়, এটা মানুষের সহজাত একটা চরিত্র।

তাই বাবা হিসেবে বন্ধুর মত সন্তানের সাথে মিশে বিভিন্ন বিষয়ে কথা, গল্প করতে হবে। সন্তান যাতে মনে করে যে তার সমস্যার জন্য বাবা আছে, সে যেন একা ফিল না করে। আপনি বাবা হিসেবে সন্তানের কাছে যত কাছে আসবেন, সন্তানও একদিন আপনার বৃদ্ধ বয়সে আপনাকে কাছে টেনে নিবে, কারণ ছোটবেলায় আপনার সাথে কাটানো মধুর স্মৃতি তাকে বারবার আপনার কথা স্মরণ করিয়ে দেবে।

আশা করি, প্রত্যেক বাবারা তার সন্তানকে এভাবে লালন করতে পারবেন, প্রত্যেক বাবা যেন সন্তানের মায়ার বন্ধনে আবদ্ধ থাকতে পারে সারাটি জীবন।

আরো পড়ুন – শিশুকে শাসন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *